রং বদলায় হোলি

রং বদলায় হোলি

রং বদলায় হোলিভারতে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী মহাসমারোহে পালন করা হয় একটিই উত্সব। হোলি। দোলপুর্ণিমার দিন রঙের খেলায় মেতে ওঠে ভারতের প্রায় সব প্রদেশই। স্থানীয় সংস্কৃতি আর গল্পকাহিনির মিশেলে মজার মাঝে খুনসুটি করার সেরা দিন বোধহয় হোলির দিনটাই। হোলির রঙের সঙ্গেই স্থান বিশেষে হোলির নাম, রং বদলায় খুনসুটিও। তবে মজাটা সবজায়গায়ই থাকে ষোলোআনা খাঁটি।

দুলন্দি হোলি- হরিয়ানায় দোল উত্সবের নাম দুলন্দি হোলি। হোলির সারাদিনই এখানে বৌদি আর দেওরের মধ্যে খুনসুটি চলে। এইদিন বৌদিরা খেলার ছলে যত খুশি দেওরদের পেটাতো পারে। তাদের শাড়ি পেঁচিয়ে দেওরের হাত পা বেঁধে ফেলে। সন্ধেবেলা বৌদিদের জন্য দেওররা মিষ্টি নিয়ে আসে। রাস্তার মাঝখানে উঁচু দড়িতে টাঙানো মাখনের হাঁড়ি ভাঙার রেওয়াজও চলে এখানে।
রং বদলায় হোলি
রঙ্গপঞ্চমী-মহারাষ্ট্রে দোল উত্সবকে বলে রঙ্গপঞ্চমী। পাঁচদিন ধরে হোলি পালন করা হয় এখানে। পঞ্চম দিনে আবির ও রং খেলা হয়। কোথাও কোথাও দোলকে শিমগা বা শিমগোও বলা হয়ে থাকে। মহারাষ্ট্রের মত্সজীবী সম্প্রদায়ের মধ্যে হোলি খুবই জনপ্রিয়। নাচ, গান ও বিভিন্ন রকম কৌতূকের মধ্যে হোলি পালিত হয় এখানে।

লাঠমার হোলি-ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় হোলি বরসনের হোলি। বরসন শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থান। এখানে এই নামেই প্রচলিত হোলি। এইদিন লাঠি হাতে মহিলারা সারাদিন ভয় দেখায় পুরুষদের। রাধা ও গোপিদের সঙ্গে কৃষ্ণের খুনসুটি ও লাঠি নিয়ে গোপিদের কৃষ্ণকে সায়েস্তা করার প্রথা মেনেই এখনও পালিত হয় হোলি। রীতি মেনে নন্দগাঁওয়ের ছেলেরা বরসনের মেয়েদের সঙ্গে হোলি খেলতে আসে। কিন্তু মেয়েরা রঙের বদলে লাঠি নিয়ে অভ্যর্থনা জানায় তাদের। পরের দিনটা থাকে ছেলেদের জন্য। এদিন বরসনের ছেলেরা রঙ মাখাতে যায় নন্দগাঁওয়ের মেয়েদের। একইভাবে নন্দগাঁওয়ের মেয়েরাও বরসনের ছেলেদের লাঠি নিয়ে তাড়া করে। রং বদলায় হোলি
হোলা মহল্লা-পঞ্জাবের আনন্দপুর সাহিবে হোলির পরের দিন পালন করা হয় হোলা মহল্লা। গুরু গোবিন্দ সিং এইদিন মেলার প্রচলন করেছিলেন। সেই প্রথা মেনে এখনও মেলা বসে। তিনদিন ধরে চলে উত্সব। শিখরা এই সময় ঘোড়ায় চড়া, নাটকীয় যুদ্ধের মাধ্যমে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করে। গুরুগ্রন্থ সাহিব থেকে কীর্তনও গাওয়া হয় এইসময়। শেষ দিন তখত কেশগড় সাহিব থেকে বের হয় লম্বা মিছিল। কিলা আনন্দগড়, লোহগড় সাহিব, মাতা জিতোজির মত শিখদের পাঁচটি ধর্মীয় স্থান দিয়ে যায় মিছিল।
এইসময় আশেপাশের গ্রামের মানুষদের গমের আটা, চাল, সব্জি, দুধ ও চিনি দেওয়া হয়।

শিমগো-গোয়ায় হোলির নাম শিমগো। এইদিন পঞ্জিমে বিশাল মিছিল বের হয়। সব ধর্ম ও জাতের মানুষ এই মিছিলে পা মেলায়। বিভিন্ন ধর্মীয় ও পৌরাণিক কাহিনি অবলম্বনে নাটকও অনুষ্ঠিত হয়। রং খেলার পর ভাত, শাগোতি নামক মাংসের বিশেষ পদ ও বিভিন্ন রকম মিষ্টি সহযোগে চলে অতিথি আপ্যায়ন।

কামন পাণ্ডিগাই-তামিল নাড়ুতে হোলির তিন নাম। কামন পাণ্ডিগাই, কামবিলাস ও কাম-দহনম। কামদেবের পুজোর মাধ্যমে হোলি পালিত হয় এখানে।

First Published: Thursday, March 21, 2013, 20:54


comments powered by Disqus