Last Updated: June 25, 2012 09:07

মাহির মর্মান্তিক মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই ফের একই রকম দুর্ঘটনা ঘটল হাওড়ায়। রবিবার লিলুয়ার একসরায় গভীর কুয়োয় পড়ে মৃত্যু হল ১৬ বছরের কিশোর রোশন পানেরির।
অবশেষে টানা ৯ ঘণ্টার চেষ্টার পর উদ্ধার করা সম্ভব হল হাওড়ার লিলুয়ার একসরায় কুয়োয় পড়ে যাওয়া কিশোরের দেহ। প্রথমে সার্চ ক্যামেরা নামানো হয়। ক্যামেরার মাধ্যমে দেহের অবস্থান বুঝে নেওয়া হয়। এরপরই নামানো হয় দু`জন পাতকুয়ো মিস্ত্রিকে। সেই পাতকুয়ো মিস্ত্রিরা প্রথমে উঠে আসেন। পরে তোলা হয় কিশোরের দেহ। এরপরই ওই কিশোরকে তোলা হয়। হাওড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ওই কিশোরের দেহ নিয়ে যাওয়ার পর তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
রবিবার দুপুরে কুয়ো দেখতে গিয়ে হঠাত্ই পাড় ভেঙে রোশন পানেরি পড়ে যায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। বিহারের ভাগলপুরের বাসিন্দা রোশন স্থানীয় একটি কয়লার দোকানে কাজ করতেন বলে জানা গেছে। এরপর উদ্ধার কাজে নামেন দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দলের একজন ডুবুরি। পাতকুয়োর বের নরম হওয়ায় তা বারবারই ধসে পড়তে থাকে। কিন্তু ডুবুরির তুলে নেওয়া হয়। কিশোরকে দেখতে পাওয়া গেছে বলে উঠে এসে জানান ডুবুরি। কুয়োর পাশে একটি গর্ত খুঁড়ে কিশোরের দেহ উদ্ধারের ভাবনা চিন্তা শুরু হয়। এ জন্য মেট্রোর উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন মাটি খোঁড়ার যন্ত্র নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যেই পাম্প করে এবং বালতি নামিয়ে কুয়োর জল তোলারও চেষ্টা হয়। কিন্তু জলা এলাকা হওয়ায় আশপাশের থেকে জল ঢুকে পড়তে থাকে।
এরপর বেশ কয়েকটি আংটা বেঁধে একটি দড়ি নামানো হয়। সেই আংটাতে কিশোরের দেহ আটকেছে বলে জানান দমকলকর্মীরা। কুয়োর ভিতরে অক্সিজেনের অভাব রয়েছে বলে জানানো হয় উদ্ধারকারীদের তরফে। পরিস্থিতি সামলাতে রাজ্য প্রশাসনের তরফে সেনাবাহিনীকে তৈরি থাকতে বলা হয়। তৈরি থাকতে বলা হয় বিএসএফকেও। প্রয়োজনে মধ্যমগ্রামের বাদু থেকে বিএসএফের দল আনারও প্রস্তুতি নেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে ছিলেন দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান, হাওড়া সিটি পুলিসের কমিশনারও। যে বাড়ির জন্য কুয়ো তৈরি করা হয়েছিল, সেই বাড়ির মালিকের বেশ কিছু গাফিলতি রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিস। বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করা হয়েছে।
অভিযোগ, হাওড়ার একসরায় কুয়োয় পড়ে যাওয়া শিশুটিকে উদ্ধারে এগিয়ে এসেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু প্রশাসনের তরফে তাঁদের নামতে দেওয়া হয়নি। এরপর দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা ধরে চলতে থাকে উদ্ধারের চেষ্টা। একাধারে দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলার দল উদ্ধারের কাজ চালিয়ে যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিশোরে দেহ হয় উদ্ধার প্রায় অপ্রশিক্ষিত দু`জন মানুষের সাহায্যে। এরপরই প্রশ্ন উঠছে, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর কিংবা দমকলের পরিকাঠামো এবং প্রশিক্ষণ নিয়ে।
First Published: Monday, June 25, 2012, 09:59