মধ্যপ্রদেশ পুলিসকে দুষে সিবিআই তদন্ত চাইলেন নিহত আইপিএস-এর বাবা

মধ্যপ্রদেশ পুলিসকে দুষে সিবিআই তদন্ত চাইলেন নিহত আইপিএস-এর বাবা

মধ্যপ্রদেশ পুলিসকে দুষে সিবিআই তদন্ত চাইলেন নিহত আইপিএস-এর বাবামধ্যপ্রদেশে তরুণ আইপিএস অফিসার নরেন্দ্রকুমার সিংয়ের খুনের ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি করলেন পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্যপ্রশাসনের উঁচুতলার যোগসাজশে, সুপরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হয়েছে মোরেনা জেলার বানমোরের সাব ডিভিশনাল পুলিস অফিসার (এসডিপিও) পদে কর্মরত ৩০ বছরের ওই আইপিএস অফিসারকে। এদিন নিহত পুত্রের অন্তেষ্টিতে দাঁড়িয়ে নরেন্দ্রকুমারের বাবা কেশব দেব অভিযোগ করেন, খনি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমে স্থানীয় পুলিস প্রশাসনের কোনও সাহায্যই পাননি তাঁর ছেলে। পুরো ঘটনার পিছনে মধ্যপ্রদেশের শাসক দল বিজেপি`র দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তিনি।

বুধবার বানমোর শহরের অদূরে হোলির রুটিন পুলিস টহল তত্ত্বাবধানের সময় খনি মাফিয়াদের পাথর বোঝাই ট্রাক্টরটিকে দেখতে পান ২০০৯-এর আইপিএস অফিসার নরেন্দ্রকুমার সিং। নিজের জিপে চড়ে পাথর বোঝাই ট্রাক্টর-ট্রলিটেক ওভারটেক করে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেন তিনি। কিন্তু গাড়ি না দাঁড় করিয়ে প্রকাশ্য রাস্তায় তাঁকে পিষে দেয় খনি মাফিয়ারা। হাসপাতালে নিয়ে গেলে নরেন্দ্রকুমারকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। ইতিমধ্যেই ট্রাক্টর চালক মনোজ গুর্জরকে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। কিন্তু কেশব দেবের চাঞ্চল্যকর মন্তব্য, শুধুমাত্র ট্রাক্টর চালককে গ্রেফতার করে এই খুনের কিনারা করা সম্ভব নয়। রাজ্য সরকারের অনেক উপর মহলের `চাঁই`রা রয়েছে এই ঘটনার পিছনে।

বস্তুত, ইতিমধ্যেই রাজ্য প্রশাসনের অন্দমহলে এই প্রশ্ন উঠেছে। মাত্র মাস দেড়েক বানমোরে এসডিপিও নিযুক্ত হয়েছিলেন অত্যন্ত সত্‍ ও দক্ষ অফিসার হিসেবে পরিচিত নরেন্দ্রকুমার। এই সামান্য সময়ের মধ্যেই এলাকায় অবৈধ খননে যুক্ত একাধিক ট্রাক এবং ট্রাক্টর বাজেয়াপ্ত করেছিলেন। আর সেই বিষয়টিই সম্ভবত রাতের ঘুম কেড়েছিল খনি মাফিয়াদের। বছরখানেক আগে মহারাষ্ট্রের মালেগাঁওতে প্রতিবাদ করে তেল মাফিয়াদের ধরতে গিয়ে তাদের হাতে জীবন্ত দগ্ধ হতে হয়েছিল আইএএস অফিসার যশবন্ত সোনওয়ানেকে। সে সময়ও মারাঠা মুলুকের প্রভাবশালী তেল চোরাকারবারী চক্রের সঙ্গে প্রশাসনের উপরতলার যোগাযোগের অভিযোগ উঠেছিল। মধ্যপ্রদেশ পুলিসকে দুষে সিবিআই তদন্ত চাইলেন নিহত আইপিএস-এর বাবা

নিহত নরেন্দ্রকুমারের স্ত্রী মধুরানি তেওয়াতিয়া`ও একজন আইএএস অফিসার। মধ্যপ্রদেশেরই কর্মরত সন্তানসম্ভবা মধুরানি বর্তমানে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছেন। মধুরানিও জীবনের আশঙ্কা রয়েছ বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে কেশব দেবের অভিযোগ, এর আগে খনি মাফিয়া লবির সঙ্গে যুক্ত এক প্রভাবশালী বিজেপি বিধায়কের নির্দেশে রাজগড় জেলা থেকে বদলি করা হয়েছিল তাঁর পুত্রবধূকে।

মধ্যপ্রদেশের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উমাশঙ্কর গুপ্তা পুরো ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের আশ্বাস দিলেও বাস্তবে তা কার্যকর হবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে ওয়াকিবহাল মহলে। এদিনই চম্বল রেঞ্জের ডিআইজি ডিপি গুপ্তা জানিয়েছেন, নরেন্দ্রকুমারের মৃত্যুর ঘটনায় `মাইনিং লবি`র হাত রয়েছে কি না সে ব্যাপারে এখনও কোনও তথ্য মেলেনি তদন্তে। মোরেনা জেলার সংশ্লিষ্ট এলাকায় দামি কোনও খনিজ পদার্থ মেলেনা বলেও দাবি করেছেন তিনি।

First Published: Friday, March 9, 2012, 12:38


comments powered by Disqus