LIVE: Super Sunday for BJP, Congress bites dust, stunning show by AAP

রবিবারের হিট বিজেপি, মাটি খুঁজছে কংগ্রেস, দিল্লিতে বাজিমাত আম আদমির

বিজয়ের পর প্রথমবার সাংবাদিকদের সামনে অরবিন্দ কেজরিওয়াল। রবিবারের সফলতার ভাষণে কেজরিওয়াল বলেন, আজকের ফলাফলে স্পষ্ট মানুষ বিজেপি-কংগ্রেসের দুর্নীতির ওপর বিতশ্রদ্ধ হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষ দুর্নীতির `কূ-শাসনকে` রাজনীতির আঙিনা থেকে উপড়ে ফেলবেই। কেজরিওয়ালের কথায়, "এই লড়াই ছিল সততা আর দুর্নীতির মধ্যে।"

কেজরিওয়াল আরও বলেন ইতিহাসে প্রথম কোনও নির্বাচন সত্যতার জন্য হল। সত্যতার ওপর নির্ভর করে। দিল্লি নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হরিষ বর্ধনকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন আম আদমি পার্টি প্রধান। তবে আম আদমির সঙ্গে দেশের প্রধান বিরোধী শক্তির সঙ্গে জোট সরকার গঠনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

সদ্য সমাপ্ত হওয়া বিধানসভা নির্বাচনে শুধু কংগ্রেসের হারই হয়নি, রাজধানী দিল্লিতে ক্ষমতাসীন দল চার ভাগের এক ভাগ ভোট জটাতে ব্যর্থ হয়েছে। রবিবারের রায়ের পর এখন কেজরিওয়ালের উৎসব করার পালা। বাজী ফাটছে বিজেপির ঘরেও।

হারেও সাহসী প্রতিক্রিয়া কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর। তিনি বলেন, "এই ফলাফল আমাদের শিক্ষা দিয়েছে। আমাদের ভুলগুলো শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করব।" দল পরিচালনার দিক থেকে খামতি থাকলেও, তার ওপর নজর দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী।

সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ চার রাজ্যের এই রায়ের পর ২০১৪-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নির্বাচনে কংগ্রেস বেশ কয়েক দফা বৈঠক করবে বলে জানিয়েছেন সোনিয়া। ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর দ্রৌড়ের ঘোড়া শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে। কংগ্রেস সহ সভাপতি রাহুল গান্ধী জানিয়েছেন, "এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মানুষ একটা বার্তা দিতে চেয়েছেন। আমরা মন থেকে সেই বার্তা শুনতে পারছি।" মানুষের অশনীসংকেত ভালই শুনতে পারছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। বিশ্লেষণ রাজনৈতিক মহলের।


অন্যদিকে বিজেপি চার রাজ্যে রায়ে আরও উজ্জ্বল করেছে বিজেপির নির্বাচনি স্বপটাকে। রায় ঘোষণার পর দিল্লি উড়ে যেতে বাধ্য করেছে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদীকে। মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানে বিপুল ভোটে জয় নিশ্চিত করেছে বিজেপি। ছত্তিসগড়েও তাঁরা সরকার গঠন করতে পারবে বলে আশাবাদী বিজেপি নেতৃত্ব। পাঁচ রাজ্যের সেমিফাইনালের রায় ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনেও প্রতিফলিত হবে বলে মনে গেরুয়া বাহিনী।

এরপর পড়ুন চার রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের রায় একে একে-

দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন

দিল্লিতে কংগ্রেসের দুর্গে বড়সড় আঘাত হানল বিজেপি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ভোটের যে ফল সামনে এসেছে, তাতে দিল্লি বিধানসভা ত্রিশঙ্কু হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। দিল্লিতে বিজেপি সবচেয়ে বেশি আসনে এগিয়ে রয়েছে। এগিয়ে রয়েছেন দলের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হর্ষবর্ধনও। বিজেপির পরেই রয়েছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আমআদমি পার্টি। কংগ্রেসকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে তারা। দিল্লির তখতে পরপর তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত। কিন্তু ওই কেন্দ্রে তাঁকেও পিছনে ফেলে দিয়েছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন শীলা দীক্ষিত। দিল্লিতে বিজেপি যে এবার ভাল ফল করবে, বুথ ফেরত সমীক্ষা রিপোর্টে তেমনই ইঙ্গিত মিলেছিল। প্রথম ভোটযুদ্ধে আমআদমি পার্টি কেমন ফল করে, তার দিকে নজর ছিল সকলের। প্রত্যাশার চেয়েও ভাল ফল করেছে এএপি। এখনও পর্যন্ত প্রকাশিত ফলাফলের প্রবণতা বজায় থাকলে তারাই দিল্লি বিধানসভায় বিরোধীদল হতে চলেছে।

মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন

মধ্যপ্রদেশে দুর্গ ধরে রাখল বিজেপি। শুধু দুর্গ ধরে রাখলই নয়। রাজস্থানের মতো মধ্যপ্রদেশেও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার পদ্মফুল ফোটাল দল। ইতিমধ্যেই একশ পঞ্চান্নটি আসন পেয়েছে গেরুয়া শিবির। শিবরাজ সিং চৌহানের দুর্গে কেন আঁচড় কাটতে পারল না কংগ্রেস ? উচ্ছ্বসিত বিজেপি শিবির বলছে, উন্নয়নের ধবজা উড়িয়ে ছিল চৌহান সরকার। ইভিএমে তারই ছাপ পড়েছে। বিজেপির এই সাফল্যের জন্য রাজ্যবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। আগের দুবারের মতো এবারেও উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাবেন বলেও জানিয়েছেন শিবরাজ সিং চৌহান। দলের নীচু তলার কর্মী থেকে শীর্ষ নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। দুহাজার চোদ্দর লোকসভা নির্বাচনে মধ্যপ্রদেশ থেকেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সাংসদ দল পাবে বলে আশাবাদী শিবরাজ সিং চৌহান। কেন্দ্রে বিজেপি সরকার গঠন করতে পারবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন তিনি।

রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচন

রাজপুতের রাজ্যে গেরুয়া ঝড়। আর তাতেই তছনছ হয়ে গেল কংগ্রেস শিবির। এখনও পর্যন্ত প্রকাশিত ভোটের ফল অনুযায়ী, রাজস্থানে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে চলেছে বিজেপি। চার রাজ্যের নির্বাচনে রাজস্থানে সবচেয়ে খারাপ ফল করেছে কংগ্রেস। যদিও এই ব্যর্থতার কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলোত। তাঁর দাবি, রাজ্যের মানুষের জন্য কল্যাণমূলক কর্মসূচি নিয়েছিল তাঁর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার। অন্যদিকে, বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়ার বক্তব্য, কংগ্রেসের দুঃশাসনকেই উত্খাত করেছে রাজস্থানের মানুষ। মোদী ফ্যাক্টরও রাজস্থানে বিজেপির ভাল ফলের জন্য দায়ী বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

ছতিশগড় বিধানসভা নির্বাচন

তিন রাজ্যে ধরাশায়ী হলেও ছত্তিসগড়ে বিজেপির সঙ্গে টক্কর দিচ্ছিল কংগ্রেস। কিন্তু সেই ছত্তিশগড়ও কংগ্রেসকে বিমুখ করল। ছত্তিশগড় বিজেপির দখলে এল। বিজেপির দাবি, মাওবাদী হামলায় দলীয় নেতা মৃত্যুর ঘটনায় সহানুভূতির ভোট পেয়েছে কংগ্রেস। তার জোরেই এই খারাপ পরিস্থিতিতেও ছত্তিসগড়ে বিজেপিকে বেগ দিয়েছে তারা। গত মে মাসে ছত্তিসগড়ের বস্তার অঞ্চলে মাওবাদী হামলায় মহেন্দ্র কর্মা, নন্দকিশোর প্যাটেল সহ ছত্তিসগড় প্রদেশ কংগ্রেসের কয়েকজন নেতার মৃত্যু হয়। তার জেরে কার্যত নেতৃত্বহীন হয়ে পড়ে ছত্তিসগড় প্রদেশ কংগ্রেস। ছন্নছাড়া অবস্থাতেই চলে তাদের ভোটপ্রস্তুতি। ছত্তিসগড়ে মোদীর একাধিক প্রচার অভিযান কংগ্রেসের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল। তারপরেও দলের এমন ফলে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি কংগ্রেস শিবির।

First Published: Sunday, December 8, 2013, 21:53


comments powered by Disqus