Last Updated: December 31, 2012 12:17

একত্রিশে ডিসেম্বরের রাত। সময় নাচ-গান, হই-হুল্লোড়ের মধ্যে বর্ষবরণের। আলোর রোশনাইয়ে সেজে ওঠে গোটা বিশ্ব। কিন্তু অনিমা দত্তের জীবন থেকে সব আলো কেড়ে নিয়েছে এই একটি তারিখ। ঠিক এক বছর আগে এই দিনেই একমাত্র ছেলেকে হারিয়েছিলেন অনিমাদেবী। সাউথ সিটি আবাসন চত্বরে মিলেছিল কৌশিক দত্তের দেহ। অনিমা দেবীর অভিযোগ, ছেলেকে খুন করা হয়। বিচারের আশায় থানা-পুলিস সবই করেছেন। কিন্তু নিট ফল শূন্য। ষাটোর্ধ্ব এই বৃদ্ধা তাই ক্লান্ত। কিন্তু হতাশ নন। আজও তাঁর দাবি একটাই। ছেলের মৃত্যুর বিচার হোক।
অনিমা দত্ত। সল্টলেকের করুণাময়ীর বাসিন্দা। কর্মসূত্রে বিদেশে থাকতেন তাঁর ছেলে কৌশিক দত্ত। মায়ের শরীর খারাপের খবর পেয়ে গতবছর কলকাতায় আসেন। ঠিক করেছিলেন, নতুন বছরের শুরুটা করবেন কলকাতায় থেকেই। কিন্তু শুরু নয়, শেষ হয়ে যায় তাঁর জীবন। গতবছর একতিরিশে ডিসেম্বর রাতে সাউথ সিটি আবাসন চত্বরে দেহ পাওয়া যায় কৌশিক দত্তের। অনিমাদেবীর বক্তব্য, বর্ষবরণের রাতে ওই আবাসনের একত্রিশ তলায় এক বান্ধবীর বাড়িতে গিয়েছিলেন কৌশিকবাবু। মায়ের সঙ্গে শেষবার কথা বলেছিলেন রাত দেড়টা নাগাদ। এরপর রাত আড়াইটেয় কৌশিকবাবুর বান্ধবী ফোন করেন অনিমাদেবীর মোবাইলে। আসে সেই দুঃসংবাদ।
পুলিসি তদন্তে কৌশিকবাবুর বান্ধবী দাবি করেছেন, অতিরিক্ত মদ্যপানের জন্য বেহুঁশ অবস্থায় একত্রিশ তলার বারান্দা থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন কৌশিক দত্ত। কিন্তু পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট বলছে অন্য কথা।
অনিমাদেবীর অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে তাঁর ছেলেকে। ঘটনার পর কেটে গেছে এক বছর। অথচ মামলা এগোয়নি এতটুকু। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য তাঁকে টাকার প্রলোভন দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন অনিমা দত্ত।
সাইত্রিশ বছরের ছেলেকে অকালে হারানোর শোক তাড়া করে বেড়াবে সারা জীবন। থাকবে শূন্যতা। তবু মায়ের আশা, এই মৃত্যুর সঠিক বিচারটুকু পাওয়া গেলে হয়ত একটু হলেও প্রলেপ লাগবে ক্ষতে।
First Published: Monday, December 31, 2012, 12:17