দিল্লি এসে বিজেপি নেতৃত্বের আশ্বাস পেলেন ইয়েদুরাপ্পা

দিল্লি এসে বিজেপি নেতৃত্বের আশ্বাস পেলেন ইয়েদুরাপ্পা

দিল্লি এসে বিজেপি নেতৃত্বের আশ্বাস পেলেন ইয়েদুরাপ্পাকর্নাটকের উপনির্বাচনে বিজেপি'র 'সর্বনাশ' ক্রমশই 'পৌষ মাস' হয়ে দেখা দিচ্ছে বোকানাকেরে সিদ্ধালিঙ্গাপ্পা ইয়েদুরাপ্পার সামনে। ১১ অশোক রোড সূত্রে খবর, সমস্ত কিছু ঠিকঠাক থাকলে কর্নাটক বিধানসভার বাজেট অধিবেশন শেষ হওয়ার পর, আগামী মাসের গোড়াতেই বেঙ্গালুরুর কুর্সি ফেরত পেতে চলেছেন শিকারিপুরার লিঙ্গায়েত নেতা। যদিও কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সদানন্দ গৌড়া ও তাঁর অনুগামীদের দাবি আপাতত রাজ্যে নেতৃত্ব বদল না করার আশ্বাস দিয়েছে বিজেপি হাইকমান্ড।

মঙ্গলবার রাতে নিতিন গডকড়ি-অরুণ জেটলিদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনায় বি এস ইয়েদুরাপ্পার ক্ষোভ প্রশমনের পর মনে করা হয়ছিল, কর্নাটকে সঙ্কট কাটল বিজেপি`র। কিন্তু চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই উদুপি-চিকমাগালুর লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে অপ্রত্যাশিত পরাজয় ফের তৈরি হয় অনিশ্চয়তার আবহ। মুখ্যমন্ত্রী ডি ভি সদানন্দ গৌড়ার ছেড়ে দেওয়া লোকসভা আসনে কংগ্রেসের বিপুল জয়ের খবর মেলার পরই ফের ইয়েদুরাপ্পাকে মুখ্যমন্ত্রী করার তোড়জোড় শুরু হয় গেরুয়া শিবিরের অন্দরমহলে। দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বের ডাক পেয়ে রাতেই দিল্লি উড়ে যান ইয়েদুরাপ্পা। এদিন সকালে বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ি, কর্নাটকের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অরুণ জেটলির পাশাপাশি লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর যোশি, রাজনাথ সিংয়ের মতো সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাত্‍ করেন তিনি।

বেআইনি আকরিক লোহা খনন এবং জমি কেলেঙ্কারির ঘটনায় লোকায়ুক্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে দায়ের হওয়া মামলার জেরে গত বছরের জুলাই মাসে মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হন বি এস ইয়েদুরাপ্পা। সে সময় বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে তাঁকে বছর খানেকের মধ্যেই কন্নড় মুলুকের `রাজ্যপাট` ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। এর পর চলতি মাসের ৮ তারিখ কর্ণাটক হাইকোর্ট অবৈধ আকরিক লোহা খনন মামলা থেকে তাঁকে রেহাই দেওয়ার পর কুরসি ফেরত পেতে আরও তত্‍পর হয়ে ওঠেন শিকারিপুরার লিঙ্গায়েত নেতা। বিজেপি সভাপতির সঙ্গে দিল্লিতে সাক্ষাত্‍ করে নিজের দাবি জানানোর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে চাপে রাখতে ৪৮ ঘণ্টার `আল্টিমেটাম` দেন তিনি। সেই সঙ্গে বিধানসভার বাজেট অধিবেশন বয়কট শুরু করে দেন ইয়েদ্দুরাপ্পা ঘনিষ্ঠ বিধায়করা। শেষপর্যন্ত মঙ্গলবার রাতের বৈঠকে বরফ গলার পর বিধানসভা অধিবেশনে যোগ দেন ইয়েদুরাপ্পা-অনুগামী বিধায়করা।
দিল্লি এসে বিজেপি নেতৃত্বের আশ্বাস পেলেন ইয়েদুরাপ্পা

কিন্তু, বুধবার উপনির্বাচনী বিপর্যয় বিজেপি শীর্ষনেতৃত্বের অঙ্কটাকে অনেকটা এলোমেলো করে দিয়েছে। ১২০ বিধায়কের বিজেপি পরিষদীয় দলে সংখ্যাগরিষ্ঠর সমর্থন রয়েছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর দিকে। পরিষদীয় সংখ্যাতত্ত্বের এই সহজ হিসেবটা বুঝতে পেরেই তড়িঘড়ি ইয়েদুরাপ্পাকে দিল্লি ডেকে পাঠিয়েছেন নিতিন গডকড়ি। হাইকমান্ডের বার্তা পেয়ে দিল্লি এসেছেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ডি ভি সদানন্দ গৌড়াও। আগামী বছরেই বিধানসভা নির্বাচন কর্নাটকে। বুধবারের লোকসভা উপনির্বাচনের ফলাফলে স্পষ্ট, ক্যারিশমাহীন সদানন্দকে সামনে রেখে ভোটযুদ্ধে বাজিমাত করা সম্ভব হবে না।

তা ছাড়া কন্নড় মুলুকের জাতপাত ভিত্তিক রাজনৈতিক সমীকরণও টিম গডকড়ির মুখ্যমন্ত্রী বদলের ভাবনাকে উসকে দিয়েছে। ভোটের ফলাফলে পরিষ্কার চিরাচরিত লিঙ্গায়েত ভোটব্যাঙ্ক এবার 'কমল কা নিশান'কে বিমুখ করেছে। এই পরিস্থিতিতে ভোক্কালিগা মুখ্যমন্ত্রী সদানন্দ গৌড়াকে সরিয়ে কোনও লিঙ্গায়েত নেতাকে মুখ্যমন্ত্রী করার ব্যাপারে এক রকম স্থির সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। ইয়েদুরাপ্পা ছাড়া কর্নাটক বিজেপির একমাত্র প্রথম সারির লিঙ্গায়েত 'মুখ' জগদীশ সেট্টার। কিন্তু নিজের কট্টর বিরোধী এই নেতাকে কোনও অবস্থাতেই মেনে নেবেন না ইয়েদুরাপ্পা। সে ক্ষেত্রে বিকল্প থাকছে একটাই।




First Published: Thursday, March 22, 2012, 15:40


comments powered by Disqus