Last Updated: November 21, 2012 13:11

এ যেন প্রতিরক্ষার জন্য দেশের গোপন লড়াই। আর এই গোপন লড়ায়েরই নাম ছিল `অপারেশন এক্স`। আর এই 'অপারেশন এক্স'-এর গোপনীয়তা বলতে ঠিক কতটা তার একটা প্রমাণ, ফাঁসুড়েও জানতেন না তিনি কসাভকে ফাঁসি দিতে চলেছেন। 'অপারেশন এক্স'এর শুরুতেই ঠিক হয় চূড়ান্ত গোপনীয়তার মধ্যে এই কাজ সারতে হবে। প্রথমে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, এন এস এ-র প্রধান, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব, এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাপ্রধান ছাড়া আর কেউ জানতেন না ফাঁসির সিদ্ধান্তের কথা৷ এরপর সেই গোপন কথা জানানো হয় মুম্বই পুলিশ কমিশনার সতপাল সিংকে। গতকাল রাতে 'অপারেশন এক্স'-এর কথা জানানো হয় পুণে পুলিসের প্রধান মিরান বোরওয়ানকারকে। মিরন ইয়েরওয়াড়া জেলের দায়িত্বে ছিলেন। পরে জানা যায় মোট ১৭ জন জানতেন 'অপারেশন এক্স'এর কথা।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিণ্ডে জানিয়েছেন, নিরাপত্তার কারণেই কসাভের মৃত্যু নিয়ে গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়েছে। তিনি বলেন, পাকিস্তান চাইলে কসাভের দেহ তাদের হাতে তুলে দেওয়া হত। বিদেশমন্ত্রকের তরফে কসাভের দেহ তুলে দেওয়ার কথা ইসলামাবাদকে জানানোও হয়েছে। কিন্তু, পাকিস্তানের তরফে কোনও জবাব আসেনি বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
মুম্বই জঙ্গি হামলায় সাজাপ্রাপ্ত একমাত্র জীবিত পাকিস্তান জঙ্গি গুনমান মহম্মদ আজমল কসাভকে আজ সকাল সাড়ে সাতটায় পুণের ইয়েরওয়াড়া জেলে ফাঁসি দেওয়া হয়। গত ৫ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী কসাভের প্রানভিক্ষা খারিজ করে দেওয়ার পর শুরু হয় `অপারেশন এক্স`। নেতৃত্বে থাকেন স্পেসাল আই জি (আইন ও শৃঙ্খলা) দেভান ভারতী। তার ফাঁসি দেওয়ার পর শেষ হয় এই অপারেশন।
এই লড়ায়ের মধ্যে কি কি কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে, সেটা দেখে নেওয়া যাক।
১৬ অক্টোবর ২০১২- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে প্রথমে কসাভের প্রাণভিক্ষার আর্জি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়।
৫ নভেম্বর ২০১২- রাষ্ট্রপতি এই প্রাণভিক্ষার আর্জি সরাসরি খারিজ করে দেন।
৭ নভেম্বর ২০১২- তারপর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিণ্ডে কসাভের প্রাণদণ্ডের নির্দেশে সই করেন।
৮ নভেম্বর ২০১২- পুরো ব্যাপারটা মহারাষ্ট্র সরকারকে জানানো হয়। তারপরই নিশ্ছিদ্র গোপনীয়তায় কসাভের ফাঁসি ঠিক হয় ২১ তারিখ।
১৯ নভেম্বর ২০১২- মুম্বইয়ের আর্থার জেল থেকে কসাভকে নিয়ে আসা হয় পুণের ইয়েরওয়াড়া জেলে।
২১ নভেম্বর ২০১২- সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ কসাভের শেষ ইচ্ছা জিজ্ঞাসা করা হয়। সে জানায়, তার কোনও শেষ ইচ্ছা নেই।
সকাল ৭:৩০- ইয়েরওয়াড়া জেলে কসাভকে ফাঁসি দেওয়া হয়।
সকাল ৯:৩০- এই জেলের চত্বরেই তাকে কবর দেওয়া হয়।
First Published: Wednesday, November 21, 2012, 17:45