ভিন রাজ্যে আলু পাঠানোয় নিষেধাজ্ঞা, সিঁদুরে মেঘ দেখছে ব্যবসায়ীরা

ভিনরাজ্যে আলু পাঠানোয় নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে ওড়িশা সীমান্তে বাংলার দিকে আসা পেঁয়াজ, মাছের ট্রাক আটকাল স্থানীয়রা

ভিনরাজ্যে আলু পাঠানোয় নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে ওড়িশা সীমান্তে বাংলার দিকে আসা পেঁয়াজ, মাছের ট্রাক আটকাল স্থানীয়রাভিনরাজ্যে আলু পাঠানোয় নিষেধাজ্ঞার জারি করেছে রাজ্য। আর তার পাল্টা হিসেবে আজও ওড়িশা সীমানায় ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে পশ্চিমবঙ্গের দিকে আসা পেঁয়াজ ও মাছের ট্রাক আটকে রেখেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গতকাল থেকেই পেঁয়াজ ও মাছ ভর্তি ট্রাক আটকানো শুরু করেন ওড়িশার স্থানীয় বাসিন্দারা। যার ফলে রাজ্যে পেঁয়াজ, মাছ ও বিভিন্ন ধরনের সবজির দাম ফের বাড়ার আশঙ্কা করছেন রাজ্যবাসী। ওড়িশার স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গ আলু রপ্তানীতে নিষেধাজ্ঞা জারি করার পরই ওড়িশার মত রাজ্যে দেখা দিয়েছে আলু সংকট। অবিলম্বে পশ্চিমবঙ্গ যদি নিষেধাজ্ঞা না তোলে তাহলে এই আন্দোলন চলবে বলেই জানিয়েছেন ওড়িশার বাসিন্দারা।

আলুর বদলা কি পেঁয়াজে? মাছে? ভিনরাজ্যে আলু পাঠানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জবাব দিয়েছে ওড়িশাও। সেখানে আটকানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে আসা মাছ আর পেঁয়াজের ট্রাক। অন্যান্য রাজ্যও যদি ওড়িশার পথে হাঁটে তখন কি হবে? মুখ্যমন্ত্রীর নিষেধাজ্ঞা বুমেরাং হয়ে ফিরে আসবে না তো?

শনিবার ওড়িশা সীমানায় ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে পশ্চিমবঙ্গের দিকে আসা পেঁয়াজ ও মাছের ট্রাক আটকে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত লক্ষ্মণনাথ এলাকায় আটকে থাকে প্রায় ৪০টি ট্রাক।

প্রশাসনের অনুরোধে অবরোধ উঠলেও, এই ঘটনায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন রাজ্যের ব্যবসায়ীরা। কারণ বেশ কিছু খাদ্য সামগ্রীর জন্য ভিনরাজ্যের ওপর নির্ভরশীল পশ্চিমবঙ্গ। বছরে প্রায় ১ লক্ষ ১৫ হাজার মেট্রিক টন মাছ আনতে হয় প্রধানত অন্ধ্র সহ অন্য রাজ্য থেকে। মূলত মহারাষ্ট্রের পুণে ও অন্ধ্র থেকে আসে প্রয়োজনীয় ডিমের ৫০ শতাংশ। রাজ্যের প্রয়োজনীয় ডালের দুই তৃতীয়াংশই আসে উত্তরপ্রদেশ ও রাজস্থান থেকে। মহারাষ্ট্রের নাসিক ও বিহার থেকে আসে প্রয়োজনী পেঁয়াজের ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ।

রোজ এক টন ক্যাপসিকাম আসে বেঙ্গালুরু থেকে। রোজ ১৫০ থেকে ২০০ টন কপি আসে রাঁচি ও বেঙ্গালুরু থেকে। রোজ ১০০ টন বিট-গাজর আসে দিল্লি থেকে। রোজ একটনের বেশির মটরশুঁটি আসে রাঁচি ও বেঙ্গালুরু থেকে।

ওড়িশার ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে, বা অন্যান্য রাজ্যের মানুষও সেপথে হাঁটলে কি হবে? ব্যবসায়ীরা বলছেন সেক্ষেত্রে শুধু আলু নয়। বাজার থেকে উধাও হয়ে যাবে আরও বেশ একাধিক খাদ্যপণ্য। সেই সঙ্কটের দায় কে নেবে? মুখ্যমন্ত্রীর নিষেধাজ্ঞা কি তাঁরই দিকে বুমেরাং হয়ে ফিরবে না?

First Published: Sunday, November 10, 2013, 13:53


comments powered by Disqus