Last Updated: January 31, 2012 20:41

শেষ পর্যন্ত ৫ বছরের টানটান লড়াইয়ের পর ৫ প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বীকে পিছনে ফেলল 'র্যাফেল'। ফরাসি বিমান নির্মাতা সংস্থা ড্যাসল্ট অ্যাভিয়েশনের তৈরি এই পঞ্চম প্রজন্মের মাল্টি রোল ফাইটার জেট'কে ভারতীয় বায়ুসেনার অন্তর্ভূক্ত করার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। র্যাফেল-থেকে ১২৬টি যুদ্ধবিমান কিনবে ভারতীয় বিমানবাহিনী। আন্তর্জাতিক সামরিক লেনদেনের ইতিহাসের অন্যতম বৃহত্ এই 'ডিল'-এর পিছনে খরচ হবে প্রায় ১১,০০০ কোটি মার্কিন ডলার (প্রায় ৫৫,০০,০০ কোটি টাকা)। প্রথম দফায় আগামী ৩৬ মাসের মধ্যে ১৮টি র্যাফেল বিমান ভারতে রফতানি করবে ড্যাসল্ট গোষ্ঠী। বাকি বিমানগুলি ভারতীয় সংস্থা হ্যাল-এর সঙ্গে যৌথ কারিগরী উদ্যোগে বেঙ্গালুরুতে তৈরি হবে।
প্রথম ইউপিএ সরকারের আমলে সত্তরের দশকের মিগ-২১ যুদ্ধবিমানের পরিবর্তে ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রধান ফাইটার জেট হিসেবে ১২৬টি পঞ্চম প্রজন্মের মাল্টি রোল কমব্যাট এয়ারক্র্যাফট কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রাথমিক ভাবে বরাত পাওয়ার দৌড়ে ছিল ৬টি যুদ্ধবিমান। দুই মার্কিন বিমান প্রস্তুতকারী সংস্থা লকহিড মার্টিনের এফ-১৬ আইএন ফাইটিং ফ্যালকন এবং বোয়িং-এর এফ/এ-১৮ ই/এফ সুপার ফ্যালকন-এর পাশাপাশি রাশিয়ার মিগ কর্পোরেশন নির্মীত মিগ-৩৫, সুইডেনের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নির্মাতা সংস্থা 'সাব'-এর তৈরি গ্রিপেন এবং জার্মান, ব্রিটেন, স্পেন ও ইতালির যৌথ সংস্থা 'ইউরোপিয়ান কনসোর্টিয়াম'-এর ইউরোফাইটার টাইফুন- এর তরফে ২০০৭ সালে দরপত্র জমা পড়ে ।
বস্তুত, যোগ্যতা পরীক্ষার লড়াইয়ে র্যাফেল'কে সবচেয়ে বড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছিল ইউরোফাইটার টাইফুন'ই। গত বছর জুলাই মাসে ভারত সফরে এসে ইউরোফাইটারের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। এর আগেই ভারতে এসে 'এফ' সিরিজের বিমানের পক্ষে জোরদার লবি করতে দেখা গিয়েছিল বারাক ওবামার সফরসঙ্গী মার্কিন সরকারের কর্তাদের। কিন্তু র্যাফেল-এর প্রযুক্তিগত উত্কর্ষ, বিমান প্রতি দর, প্রযুক্তি হস্তান্তর সংক্রান্ত খুঁটিনাটি বিষয় এবং ড্যাসল্ট গোষ্ঠীর সঙ্গে ভারতীর বায়ুসেনার পুরনো সম্পর্কের জেরে শেষ পর্যন্ত 'শিকে ছিঁড়ল' র্যাফেল-এর ভাগ্যে।
প্রসঙ্গত, আশির দশকে ড্যাসল্ট অ্যাভিয়েশন-এর তৈরি মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান কেনে ভারতীয় বিমানবাহিনী। এখনও ভারতীয় বায়ুসেনায় সমর সম্ভারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ মিরাজ-২০০০।
First Published: Tuesday, January 31, 2012, 20:50