বিল সইয়ে গররাজি কমিশনার, ট্রাইডেন্ট বিতর্কে সরগরম পুরসভা

বিল সইয়ে গররাজি কমিশনার, ট্রাইডেন্ট বিতর্কে সরগরম পুরসভা

বিল সইয়ে গররাজি কমিশনার, ট্রাইডেন্ট বিতর্কে সরগরম পুরসভাকলকাতা পুরসভার বসানো ট্রাইডেন্ট আলো নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। বিরোধীদের অভিযোগ, পুরসভার নিয়মনীতিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিনা টেন্ডারেই কোটি কোটি টাকার বরাত দেওয়া হয়েছে। আনকোরা, নতুন সংস্থাকে এত টাকার বরাত দেওয়া নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। শুধু তাই নয়, পুর কমিশনার এ সংক্রান্ত ৫৪০টি ফাইলে সই করতে অস্বীকার করেছেন। ফলে আটকে রয়েছে বিল।

সেজে উঠেছে কলকাতা। রাস্তায় উঁচু উঁচু বাতিস্তম্ভ থাকলেও তা ছিল শুধুই প্রয়োজনের। তাই সৌন্দর্য বাড়াতেই এই নতুন ডিজাইনের বাতিস্তম্ভ। পোশাকি নাম ট্রাইডেন্ট। আলোয় ভাসা কলকাতায়, প্রদীপের নিচের অন্ধকারের মতো সমালোচনার ঢেউ ও আছড়ে পড়তে শুরু করেছে এই ত্রিফলা আলোকে ঘিরেই। অভিযোগ উঠেছে, কোনও টেন্ডার না ডেকেই ত্রিফলা আলোর জন্য বরাত দেওয়া হয়েছে ২৫ কোটি টাকার। যেহেতু ৫ লক্ষ টাকার বেশি খরচের ক্ষেত্রে দরপত্র ডাকতে হয়, সেই কারণে এত বড় অঙ্কের টাকার কাজকে ৫৪০ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ফলে জরুরি প্রয়োজনে যেভাবে ৫ লক্ষ টাকার কমে কাজের ক্ষেত্রে বরাত দেওয়া হয়, সেইভাবেই এক্ষেত্রেও বরাত দেওয়া হয়েছে।

পুরসভার নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এর জন্য কোনও ওয়ার্ক কমিটি বা টেন্ডার কমিটি তৈরি করা হয়নি।এমনকী পুরসভার ওয়েবসাইটে বা টেন্ডার বার্তাতেও বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়নি। পুরসভা সূত্রের খবর, হিসাবের অসঙ্গতি দেখে এ সংক্রান্ত বিলে সই করেননি পুর কমিশনার। ফলে আটকে গেছে বিল। পুরসভার অর্থ দফতরের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চেয়েছেন পুর কমিশনার।

পুরসভার অফিসারদের একাংশের ধারণা, পরবর্তী সময়ে এ নিয়ে অডিট বা তদন্ত হলে সহজেই ধরা পড়ে যাবে গরমিলের ঘটনা। ফেঁসে যেতে পারেন তাঁরাও। কারণ এ সংক্রান্ত কাগজে তাঁদেরই সই থাকবে। ফলে পুরসভার অন্দরেই এ নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন কর্তাদের একাংশ। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে দফায় দফায় বৈঠকও হয়েছে মেয়র ও পুরকর্তাদের মধ্যে। তবে জটিলতা এখনও কাটেনি। এই বেনিয়ম নিয়ে সোচ্চার হয়েছে বিরোধীরাও। বিল সইয়ে গররাজি কমিশনার, ট্রাইডেন্ট বিতর্কে সরগরম পুরসভা

যদিও মেয়র অস্বীকার করেছেন এই অভিযোগ। কিন্তু খোদ পুর কমিশনার বিলে সই করতে বেঁকে বসায় পুরো বিষয়টি সামনে এসেছে। প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে পুরসভার এন্টালি ওয়ার্কশপেই কম দামে এই আলো তৈরি করা যায়, সেখানে কেন বাইরের সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছে?  কেনই বা টেন্ডার বা ওয়ার্ক কমিটি না করে এত টাকার বরাত দেওয়া হল, প্রশ্ন তা নিয়েও।

মেয়রের বক্তব্য, বর্ষার আগে তড়িঘড়ি কাজ শেষের জন্যই এভাবে বরাত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, যেখানে ৪৫,০০০ আলোর মধ্যে মাত্র ১৫,০০০ আলো এতদিনে বসেছে, সেখানে পুরো বিষয়টি যে তড়িঘড়ি হয়নি তা পরিষ্কার। দেরিই যখন হল, তখন নিয়ম মেনে বরাত দেওয়ার ক্ষেত্রে অসুবিধা কোথায় ছিল তার পরিষ্কার উত্তর নেই পুর কর্তৃপক্ষের কাছে।

First Published: Saturday, July 28, 2012, 11:19


comments powered by Disqus