Last Updated: November 27, 2011 22:32

মারা গেলেন উস্তাদ সুলতান খান। তাঁর প্রয়াণের সঙ্গে ভারতীয় মার্গ সঙ্গীতে আরও একটি নক্ষত্রের পতন হল। দীর্ঘ রোগ ভোগের পর আজ বিকেলে মুম্বইয়ে সারেঙ্গি সম্রাটের জীবনাবসান হয়।
উনিশশো চল্লিশ সালের সাতাশে নভেম্বর রাজস্থানের যোধপুরে যে বাড়িতে তাঁর জন্ম, সেই বাড়ি ছিল সারেঙ্গিরই বাড়ি। বাবা উস্তাদ গুলাব খানের কাছে প্রথম তালিম শুরু। এগারো বছর বয়সে সর্ব ভারতীয় সম্মেলনে প্রথম অংশ নেন তিনি। উস্তাদ আমির খানের কাছে শিখতে শিখতে সারেঙ্গির উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে ফেলেন সুলতান খান। উনিশশো চুয়াত্তরে জর্জ হ্যারিসনের ডার্ক হর্স ওয়ার্ল্ড ট্যুরে রবিশঙ্করের সঙ্গতে তাঁর প্রথম সাগরপারে বাজানো। তারপর থেকে তাঁর সারেঙ্গি এগিয়েই গিয়েছে। চলে গেলেন উস্তাদ সুলতান খান। পড়ে রইল তাঁর সারেঙ্গি, সেই সারেঙ্গি, যা শিল্পীর প্রয়াণের পরেও অমর হয়ে থাকবে তাঁর অশেষ হাতের স্পর্শে।

শুধু ভৈরবী, সাঝ বা ইমন নয়। সুলতান খানের সারেঙ্গি পরিণত করেছে ভারতীয় ফিউশনকেও। উস্তাদ জাকির হুসেন ও মার্কিন সুরকার বিল লাসওয়েলের সঙ্গে তাঁর তবলা বিট সায়েন্স এক সময় পৃথিবীইন্ডিয়ান ফিউশন গ্রুপ অফ একটি ফিউশন গ্রুপে। পদ্মভূষণ, দুবার সঙ্গীত নাট্য অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড, দ্য গোল্ড মেডেলিস্ট অ্যাওয়ার্ড অফ মহারাষ্ট্র, আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ আর্টিস্টস্ অ্যাওয়ার্ড, জীবনে বহু পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন সুলতান খান। পণ্ডিত রবিশঙ্কর থেকে উস্তাদ জাকির হুসেন, লতা মঙ্গেশকর থেকে খৈয়ম, ইন্দোর ঘরানার সুলতানী সারেঙ্গি সকলকেই সঙ্গত দিয়েছে। জাদু ছিল তাঁর কণ্ঠেও। সুলতান খানের হাস্কি গলায় পিয়া বাসন্তী এবং আলবেলা সাজন আও রে শ্রোতারা যতবার শুনেছেন, ততবার মোহিত হয়েছেন।
রবিবার বিকেলে মুম্বইয়ে থমকে গেল সারেঙ্গির সুলতানী যাত্রাপথ। দীর্ঘদিন ধরে ডায়ালিসিস চলছিল। সেই ধকল আর সহ্য হল না। সুলতান খান চলে গেলেন। কিন্তু এখনও তাঁর সারেঙ্গিটা বাজছে। এবং ভবিষ্যতেও বাজবে।
First Published: Tuesday, November 29, 2011, 00:02