পুলিসকে চড়! মিডিয়ায় প্রচার হতেই গ্রেফতার মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো

পুলিসকে চড়! মিডিয়ায় প্রচার হতেই গ্রেফতার মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো

পুলিসকে চড়! মিডিয়ায় প্রচার হতেই গ্রেফতার মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপোশেষ পর্যন্ত পুলিসকে মারধর করার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো আকাশ ব্যানার্জি। সেইসঙ্গেই গ্রেফতার করা হল তাঁর ২ সঙ্গী রীতেশ সিং ও অমিত মিশ্রকেও। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ৩৫৩-সহ বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা করা হয়েছে।

বুধবার খিদিরপুর মোড়ে ট্রাফিক নিয়ম না মানায় ডব্লিউ বি ০৬ এইচ ৫৬৮৬ নম্বরের কালো রঙের টয়টা ইনোভা গাড়িকে আটকায় পুলিস। এরপরই গাড়ি থেকে নেমে মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো পুলিসকে মারধর করেন। অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালিও দেন। সেই সময় উপস্থিত ছিলেন বিদ্যাসাগর ট্রাফিক গার্ডের ওসি, সার্জেন্ট, কনস্টেবল সহ অন্যান্য পুলিস কর্মীরাও। তাঁদের কয়েকজনকে ধাক্কাধাক্কি করা হয় বলেও অভিযোগ। এরপর গাড়ি-সহ আকাশ ও তাঁর সঙ্গীদের আটক করে ওয়াটগঞ্জ থানার পুলিস। কিন্তু অভিযুক্ত ব্যক্তির পরিচয় এবং কালিঘাটের সুপরিচিত ৩০ বি হরিশ চ্যাটার্জি রোডের ঠিকানা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পরই কার্যত কিংকর্ত্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন পুলিস অফিসাররা। এরপর আর মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপোকে আটকে রাখার সাহস দেখায়নি পুলিস। পত্রপাঠ তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু খবর পেয়েই বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে শোরগোল শুরু হয়। আকাশ ব্যানার্জির গ্রেফতারীর দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে তৃণমূলের জোটশরিক কংগ্রেস।

গত সপ্তাহেই নিবেদিতা সেতুর কাছে ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি-নিযুক্ত এক বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তারক্ষীকে চড় মেরেও কার্যত পার পেয়ে গিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী দোলা সেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে অভিযোগকারী হিসেবে এক কর্তব্যরত পুলিস অফিসারের নাম উঠে আসায় বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার ঝুঁকি নিতে পারেনি কলকাতা পুলিস। আকাশ এবং তাঁর ২ সঙ্গীকে গ্রেফতার করে ওয়াটগঞ্জ থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক তদন্তে প্রকাশ, গাড়িটি পশ্চিম-বন্দর থানা এলাকার।

তবে এই প্রথম নয়, এর আগে বিভিন্ন সময় নিয়মবিরুদ্ধ আচরণের অভিযোগ রয়েছে আকাশ ব্যানার্জির বিরুদ্ধে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি এক মহিলা এবং অন্য এক ব্যক্তিকে নিয়ে এই একই গাড়িতে বোটানিক্যাল গার্ডেনে গিয়েছিলেন আকাশ ব্যানার্জি। সন্ধ্যার পর বোটানিক্যাল গার্ডেনের গেট বন্ধ হয়ে গেলেও বান্ধবীকে নিয়ে জোর করে ভিতরে ঢোকেন তিনি। অপর ব্যক্তিকে পরিচয় দেন তাঁর আপ্তসহায়ক মুকেশ নামে। এরপর এই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে ১৯ ফেব্রুয়ারি। সবক্ষেত্রেই মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো পরিচয় পার পেয়ে যান আকাশ। প্রসঙ্গত, আকাশের দাদা অভিষেক ব্যানার্জি `তৃণমূল যুবা`র সভাপতি।

মিডিয়ার প্রচারের জেরে শেষ পর্যন্ত পদক্ষেপ করতে বাধ্য হলেও সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন উঠেছে, মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো কি চড় খেয়েও প্রথমে চুপ ছিল পুলিস? জামিন অযোগ্য ধারার অপরাধে অভিযুক্ত আকাশ ব্যানার্জিকে কেন প্রথমে ছেড়ে দিলেন ওয়াটগঞ্জ থানার অফিসাররা?






First Published: Wednesday, February 29, 2012, 19:03


comments powered by Disqus