Last Updated: August 14, 2012 19:55

`টু ব্রিজ দ্য গ্যাপ বিটুইন র্যাম্প অ্যান্ড দ্য র্যাক`। পাঁচ দিন ব্যাপী দিল্লি কুতুর উইকের এটাই ছিল এবারের থিম। আর এই পাঁচ দিনে দেশের ১১ জন তাবড় ডিজাইনারের কালেকশন থেকে চোখ ফেরাতে পারেনি ফ্যাশন সচেতন রাজধানীর আট থেকে আশি। ফোকাল পয়েন্টে ছিল অবশ্যই ব্রাইডাল কালেকশন। সঙ্গে উপরি পাওনা ক্যাটরিনা কাইফ, মাধুরী দিক্ষীত, শ্রীদেবীর মতো শো স্টপাররা।

ব্রাইডাল কালেকশন মূল থিম হলেও দিল্লি কুতুর উইকে জমকালো কাজের ভারী পোশাকের থেকে বেশি প্রধান্য পেয়েছিল ভারতীয় আবহাওয়ার সঙ্গে মানানসই হালকা ডিজাইনের পোশাক। ডিজাইনার বরুণ বহেলের ব্রাইডাল কালেকশন দিয়ে শুরু হয় পাঁচ দিনের দিল্লি কুতুর উইক। সিল্ক নেট, শিফন ও সিল্ক ভেলভেটের লেহেঙ্গা, শাড়ি ও আনারকলি ছিল পারফেক্ট শো ওপেনার। হালকা এমব্রয়ডারি ও গাঢ় রং। এই ছিল বরুণ বহেলের কালেকশনের মূল ফোকাস। "নতুন প্রজন্মের পছন্দ হালকা অথচ এলিগ্যান্ট পোশাক। তাঁদের কথা মাথায় রেখেই ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতার মেলবন্ধন ঘটিয়েছি আমি।" শো শেষে অকপট স্বীকারোক্তি বরুণের। তবে বরুণ বহেল হালকা এমব্রয়ডারিতে মনোনিবেশ করলেও জমকালো সুতোর কাজে চিরাচরিত ব্রাইডাল পোশাককেই গুরুত্ব দিয়েছেন মণীশ অরোরা। তিন বছর র্যাম্পের বাইরে থাকা মণীশের প্রত্যাবর্তন থিম ছিল `ইন্ডিয়া অ্যান্ড ইটস গ্রেট কালচার`। গত কয়েক বছরে প্যারিস ফ্যাশন উইকে প্রদর্শিত হওয়া তাঁর কালেকশনকেই এবার দেশের মাটিতে উপস্থাপন করেছেন মণীশ। হাতে বোনা সুতোর কাজ তাঁর এই কালেকশনের বৈশিষ্ট্য। তবে ব্রাইডাল কালেকশন প্রাধান্য পেলেও সেখানেই থেমে থাকেননি মণীশ। নতুন প্রজন্মের কথা মাথায় রেখে পেন্সিল স্কার্ট থেকে সিগেরেট প্যান্টস, সবকিছুই জায়গা করে নিয়েছে মণীশের এই অভিনব কালেকশনে।

কুতুর মানেই চড়া দাম। প্রচলিত এই ধারণা থেকে অনেকটাই আলাদা ছিল এবারের দিল্লি কুতুর উইক। গত কয়েক বছরে মধ্যবিত্ত ভারতীয়দের মধ্যে বেড়েছে ডিজাইনার পোশাকের কদর। মধ্যবিত্ত ক্রেতার কথা মাথায় রেখেই নিজেদের কালকশন তৈরি করেছেন জিজাইনারদ্বয় অসীমা ও লীনা। তবে আধুনিকতাকে প্রাধান্য দিলেও মূলত শাড়িতেই নিজের কালেকশন সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন অনামিকা খন্না। লেহেঙ্গা বা আনারকলির দিকে না ঘেঁষে শাড়ির মাধ্যমে `ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া`কে তুলে ধরাই ছিল অনামিকার লক্ষ্য। আর শো স্টপার হিসেবে তিনি পেয়েছিলেন সোনম কাপুরকে। তবে দিল্লি কুতুর উইকের সবেথেকে বড় চমক বোধহয় শর্মিলা ঠাকুর। লাল শাড়ি আর লম্বা জ্যাকেট ব্লাউজে অসীমা-লীনার শো স্টপার শর্মিলাই ছিলেন এবারের কুতুর উইকের উপহার। আর শর্মিলা যদি হন অসীমা-লীনার আবিষ্কার, তবে অঞ্জু মোদীর সারপ্রাইজ ছিল বলিউড ডিভা মাধুরী দিক্ষীত! আইভরি রঙের ভারী কাজের লেহেঙ্গা, কালো চোলী, মেরুন ওড়না, কপালে সিঁদুর---দেবীর সাজে আবির্ভূতা মাধুরী দিক্ষীত ছিলেন পারফেক্ট শো স্টপার ফর দ্য ইভনিং। মাধুরীর মতোই দিল্লি কুতুর উইকের র্যাম্পকে সমৃদ্ধ করেছেন শ্রীদেবীও। শেষ দিনে ক্রিম রঙের লেহেঙ্গা চোলীর সঙ্গে ফুল হাতা ব্লাউজে সব্যসাচী মুখার্জির শো স্টপার শ্রীদেবী আরও একবার বুঝিয়ে দিয়েছেন তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব। ভারতে অনুষ্ঠিত হবে ফ্যাশন উইক। অথচ মণীশ মালহোত্রা থাকবেন না সে তো হতেই পারে না। আর ক্যাটরিনা কাইফ যেখানে শো স্টপার সেখানে চিয়ার লিডারের আসন মাতাতে উপস্থিত ছিলেন করণ জোহর, মধুর ভান্ডারকর, সতীশ কৌশিক থেকে শুরু করে নবাগতা আলিয়া ভাট, হৃতিক পত্নী সুজানে মতো বলিউডের প্রথম সারির সেলেবরা।

ইন্দো-ডাচ সম্মিলিত প্রয়াসে ডাচ ডিজাইনার জান তামিনাউয়ের শোয়ের ঘোষণাও করা হয় দিল্লি কুতুর উইকের মঞ্চ থেকেই। এফডিসিআই ফাউন্ডেশন, এইচটিএনকে ফ্যাশন রিক্রুটমেন্ট অ্যান্ড কনসালটেন্সি ফাউন্ডেশন এবং হাউস অফ ডেনিমের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানের নাম `ডাচ ফ্যাশন হিয়ার অ্যান্ড নাউ ইন ইন্ডিয়া`। যেখানে দুজন ডাচ ডিজাইনারের সঙ্গে একই র্যাম্পে প্রদর্শিত হবে দুজন ভারতীয় ডিজাইনারের কালেকশনও।
First Published: Tuesday, August 14, 2012, 19:55