Last Updated: June 11, 2012 19:58

মে মাসে ইসলামাবাদে স্বরাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের দু`দিনের আলোচনায় প্রায় কোনও বিষয়েই ঐকমত্য হয়নি। হাফিজ মহম্মদ সইদ-সহ মুম্বই হামলার অন্য ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাগ্রহণ, দাউদ ইব্রাহিমের মতো পলাতক অপরাধীদের নয়াদিল্লির হাতে তুলে দেওয়া, পাকিস্তানের অবস্থিত বিভিন্ন ভারত-বিরোধী জঙ্গি সংগঠনের ৪২টি প্রশিক্ষণ শিবির বন্ধ করা- কোনও বিষয়েই নয়াদিল্লির আবেদনে সাড়া দেয়নি গিলানি সরকার। ফলে প্রশ্ন উঠেছে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তানের সদিচ্ছা নিয়ে। অবিশ্বাসের এই আবহের মধ্যেই সোমবার থেকে পাকিস্তানের রওয়ালপিন্ডিকে শুরু হল সিয়াচেন হিমবাহে সেনা সন্নিবেশ কমানোর বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সচিব পর্যায়ের বৈঠক। দু`দিনের এই বৈঠকে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন প্রতিরক্ষাসচিব শশীকান্ত শর্মা। অন্যদিকে পাক প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকবেন গিলানি সরকারের বিদেশ সচিব নার্গিস শেঠি। সাউথ ব্লক সূত্রে খবর, বৈঠক চলাকালীন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী নাভিদ কামারের সঙ্গেও বৈঠক করবেন শশীকান্ত শর্মা।
গত ৭ এপ্রিল সিয়াচেন হিমবাহের ধারে গায়ারিতে পাক সেনাবাহিনীর একটি ঘাঁটিতে তুষার ধসে ১৩৯ জন পাক সেনার মৃত্যুর পর সেনাপ্রধান পারভেজ আশফাক কিয়ানি পৃথিবীর উচ্চতম যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সেনা প্রত্যাহারের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। কায়ানির যুক্তি ছিল- সিয়াচেন এবং তার আশপাশের হিমবাহগুলির বরফগলা জলেই পুষ্ট হয় পাকিস্তানের বহু নদী। তাই পরিবেশ ও জলসম্পদ বণ্টন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সনদ মেনে এই এলাকাকে সেনা-মুক্ত করার প্রয়োজন রয়েছে। ১৯৮৪ সালে `অপারেশন মেঘদূত`-এর সাফল্যের ফলে সিয়াচেন হিমবাহের দু`পাশের অধিকাংশ গিরিবর্ত্মের দখল আসে ভারতীয় ফৌজের হাতে। সেখানে বেশ কিছু স্থায়ী বাঙ্কার`ও তৈরি করা হয়। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের আবেদন মেনে `ডি-মিলিটারাইজেশন`-এর নামে বাঙ্কার খালি করা হলে কারগিল কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলেই আশঙ্কা সাউথ ব্লকের। ভারতীয় সেনাকর্তাদের মতে, সে ক্ষেত্রে ২২,৩০০ ফুট উচ্চতার সিয়াচেন হিমবাহের পুনর্দখল পেতে ঝরবে বহু রক্ত।
First Published: Monday, June 11, 2012, 19:58