কখনও স্টিং কিং কখনও সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি, কর্মক্ষেত্রে পদমর্যাদার সুযোগ নিয়ে অধস্তন সহকর্মীকে যৌন

কখনও স্টিং কিং কখনও সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি, কর্মক্ষেত্রে পদমর্যাদার সুযোগ নিয়ে অধস্তন সহকর্মীকে যৌননিগ্রহের ঘটনায় দু`জনেই এক পংক্তিতে

কখনও স্টিং কিং কখনও সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি, কর্মক্ষেত্রে পদমর্যাদার সুযোগ নিয়ে অধস্তন সহকর্মীকে যৌননিগ্রহের ঘটনায় দু`জনেই এক পংক্তিতেতহেলকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তরুণ তেজপাল আর সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অশোককুমার গঙ্গোপাধ্যায়। দুজনেই এসে দাঁড়িয়েছেন এক পংক্তিতে। অভিযোগ, বিশ্বাসভঙ্গের। অভিযোগ, পদমর্যাদার সুযোগ নিয়ে অধস্তন তরুণীকে যৌন নিগ্রহের।

নামকরা সাংবাদিক। দেশজুড়ে সবাই তাঁকে একডাকে চেনে। স্টিং অপারেশন ব্যাপারটা যে কী, বলা যায় তহেলকার হাত ধরেই প্রথম জেনেছিল এ দেশের আমজনতা। রাজনৈতিক নেতাদের মনে সে দিন ভয় ধরে গিয়েছিল। গোপনে তাঁরা বলছিলেন, অচেনা লোকের সঙ্গে এ বার কথা বলতে হবে খুব সাবধানে। সেই স্টিং কিং, তহেলকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তরুণ তেজপালের দিকেই উঠেছে অভিযোগের আঙুল। যে অভিযোগে তোলপাড় গোটা দেশ। নিজের সংস্থায় কর্মরত তরুণী সাংবাদিককে যৌন নিগ্রহের অভিযোগে তেজপাল নিজেই এখন খবর। আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। কখনও নিজের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা, কখনও অভিযোগ অস্বীকার। বারবার বয়ান বদল করেছেন তরুণ তেজপাল। আদালতের রায়ে তিনি দোষী সাব্যস্ত হবেন, নাকি মুক্তি পাবেন সে অন্য প্রশ্ন। কিন্তু, কর্মক্ষেত্রে পুরুষ বসের কাছে লাঞ্ছিত হওয়া যে মহিলাদের দিনলিপি, তাঁদের কথাই আরও একবার সামনে এনে দিয়েছে তহেলকার অন্দরের ঘটনা।

তরুণ তেজপালের পর অশোককুমার গঙ্গোপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান। যাঁর সিদ্ধান্তে, কলমের এক খোঁচায় নির্ধারিত হয়ে গেছে তাবড় মামলার ভাগ্য। সেই অশোককুমার গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও উঠেছে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ। অভিযোগকারিণী একজন আইনজীবী। আইনের গূঢ় বিষয়গুলি রপ্ত করার জন্য যিনি শিক্ষানবিশ হিসাবে অশোকবাবুর কাছে গিয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ, গত বছরের ডিসেম্বরে দিল্লির হোটেলে অশোক কুমার গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে যৌন নিগ্রহ করেন। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নির্দেশে গঠিত হয় তিন বিচারপতির কমিটি। সেই কমিটি অভিযোগকারিণী ও অভিযুক্ত, দুপক্ষেরই বক্তব্য শুনে সর্বোচ্চ আদালতে রিপোর্ট জমা দিয়েছে।

গত বছরের ডিসেম্বরের ঘটনা কেন এ বছরের নভেম্বরের গোড়ায় প্রথম প্রকাশ্যে আনলেন তরুণী আইনজীবী? গোটা ঘটনায় এ প্রশ্নও উঠেছে। আর তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অশোককুমার গঙ্গোপাধ্যায়। কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের নিরাপত্তা যে বাস্তবে কতটা ভঙ্গুর, তরুণ তেজপাল ও অশোককুমার গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সেই বিষয়টিকেই নতুন করে সামনে এনেছে। দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, পদমর্যাদায় কয়েক যোজন এগিয়ে থাকা বিশিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে অধস্তন মহিলা কর্মীর বিশ্বাসের মর্যাদা না দিয়ে তাঁর সম্মান লুণ্ঠনের অভিযোগে আপাতত তোলপাড় গোটা দেশ।




First Published: Saturday, November 30, 2013, 18:49


comments powered by Disqus