Last Updated: June 20, 2014 10:21

আরও ঘনীভূত হল ইরাক-সঙ্কট। সুন্নি জঙ্গিদের কবজায় চলে এসেছে সাদ্দাম হুসেনের রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির কারখানা। কিছু পুরনো রাসায়নিক অস্ত্র এখনও সেখানে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে জঙ্গিদের পক্ষে সেগুলি সক্রিয় করা কঠিন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাহলেও গোটা পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক আকার নিল বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। হিংসার আগুনে পুড়ছে ইরাক। একের পর এক শহরের দখল চলে যাচ্ছে জঙ্গিদের হাতে। সুন্নি জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক অ্যান্ড দ্য ল্যাভেন্টের সঙ্গে সংঘর্ষে কার্যত ছন্নছাড়া দশা ইরাকি সেনাবাহিনীর। বাগদাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে জঙ্গিরা। যে কোনও মুহুর্তে নেমে আসতে পারে আক্রমণ। সাদ্দাম জমানার রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির কারখানা এবার জঙ্গিদের হাতে চলে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে উঠেছে। বাগদাদ থেকে সত্তর কিলোমিটার দূরে উত্তর-পশ্চিমে থারথার লেকের কাছে মুথান্না weapons complex-এ রয়েছে সাদ্দাম হুসেনের এই অস্ত্রভাণ্ডার।
তাঁর আমলে এখানে রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি হত বলে অভিযোগ। মার্কিন প্রশাসন সূত্রে খবর, সাদ্দাম জমানার অবসানে সেটি বন্ধ হয়ে গেলেও এখনও তাতে কিছু রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির সাজসরঞ্জাম থেকে যাওয়া অসম্ভব নয়। জঙ্গিদের পক্ষে সেগুলি থেকে রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি করা সম্ভব হবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে নিশ্চিতভাবে এঘটনা চিন্তা বাড়িয়েছে সব মহলের। উদ্বিগ্ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কড়া নজর রাখা হচ্ছে পরিস্থিতির দিকে। দেশের বৃহত্তম তৈল শোধনাগার দখলের লক্ষ্যেও হামলা চালিয়েছে সুন্নি জঙ্গিরা। প্রাথমিকভাবে সেই হামলার জবাব দিয়ে জঙ্গিদের পিছু হঠতে বাধ্য করে ইরাকি সেনা। তবে কতক্ষণ জঙ্গিদের ঠেকিয়ে রাখা যাবে তা বলতে পারছে না ইরাক প্রশাসন। সাহায্যের আশায় ওবামা প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে প্রধানমন্ত্রী নুরি-আল-মালিকি। বাগদাদকে বাঁচাতে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আকাশপথে মার্কিন হামলার আবেদনও জানিয়েছেন তিনি। উদ্বেগ বেড়ে চলেছে ইরাকে বসবাসকারী ভারতীয়দের নিরাপত্তা নিয়ে। সূত্রের খবর, প্রায় দশ হাজার ভারতীয় রয়েছেন সেখানে। ইতিমধ্যে মসুল শহর দখলের পর অন্যান্য বহু দেশের পণবন্দিদের সঙ্গে সেখানে থাকা চল্লিশ জন ভারতীয়কেও আটকে রেখেছে জঙ্গিরা।
ইরাকের পরিস্থিতির বড়রকম প্রভাব পড়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামের ওপর। হু হু করে দাম বাড়ছে। আগামী কয়েকমাসে যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞ মহলের। আগামী মাসে প্রথম বাজেট পেশের আগে রীতিমতো চ্যালেঞ্জের মুখে এনডিএ সরকার। ইরাক-সঙ্কটের জেরে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে উঠতে পারে। ফলে পেট্রোল-ডিজেল, রান্নার গ্যাসের পাশাপাশি অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা। ভারতে অপরিশোধিত তেলের চাহিদার প্রায় আশি শতাংশ আমদানি করতে হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়তে থাকা তেলের দাম নিশ্চিতভাবে সঙ্কট বাড়াবে ভারতের। ইতিমধ্যে ডলারের তুলনায় টাকার দাম অনেকটাই পড়ে গিয়েছে। এই সঙ্কট থেকে বেরনর পথ খুঁজে বের করার পাশাপাশি ইরাকে আটকে পড়া ভারতীয়দের সুরক্ষা নিশ্চিত করাই আপাতত সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মোদী সরকারের সামনে।
First Published: Friday, June 20, 2014, 10:21