হেব্বি লাগছে

হেব্বি লাগছে

Last Updated: Monday, January 21, 2013, 23:45

বছর শেষে একেবারে রগরগে উত্তেজনা। এরমধ্যেই বাংলায় নব্যযুগের নবনায়কের আর্বিভাব। একেবারে আজ কি অর্জুন। একতিরিশে ডিসেম্বরের শরীর হিট করা রাত। দোঘোটের কেরামতিতে মঞ্চে আমরা সবাই রাজা। তিনি মঞ্চে এলেন। পাশে এলি বেলি-দোলানো চেড়ি ড্যান্স। দাদা নাচছেন। ভাই নাচছেন। খইয়ের মতো উড়ছে টাকা। হেব্বি লাগছে তো? দাদার প্রশ্ন। প্রতিষ্ঠাতা দিবস বলে কথা। বীরের এ রক্ত স্রোত মাতার এ অশ্রুধারা তাতে কী চোনা দেওয়া যায়। কত স্বপ্নের বিনিময়ে এই ইজ্জতের পরিবর্তন। বছর শেষে তাঁর স্মরণে যদি একটু ট্যাঙ্গো ড্যান্স না হয় তাইলে চলে। ফুলটুস মস্তি চাই। শহীদ দিবসে পাগলু ড্যান্স দিয়ে বীর সেনানিদের শ্রদ্ধার্ঘ। পথ দেখিয়েছেন দিদি। সেই পথেই তো চলেছে ভাইয়েরা। আপনারা না বড় ইয়ে আছেন। কথায় কথায় সিল্প, সংস্কৃতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। মানে আমাদের সংস্কিতির জেঠুরা। আরে সংস্কিতি কী শুধু তোমরাই বোঝ? আসলে হিংসা। মনে শখ ষোল আনা, বুকে শুধু লাজ। এস ভাই ময়দানে নাম। দিবে আর নিবে মিলাবে মিলিবে। এতো কবিগুরুই বলে গেছেন। তবে আর লজ্জা কী। তার সঙ্গে তিনি এও বলেছেন যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো। তাই আমরা চলি সমুখ পানে। কে আমাদের রুখবে ভাই। হেব্বি লাগছে...

লে রেপপ্লে গেম অন...

লে রেপপ্লে গেম অন...

Last Updated: Friday, January 4, 2013, 15:23

মোদ্দা কথা, আমরা গেমটা হেরে গেছি দাদা। সবংশে হেরে গেছি। ফেসবুকে ঘুরছে মৃত্যুমুখী সুন্দরীর মুখ। এ ঘুমোনো মেয়ে পৃথিবীর। এরে লয় শুষে- দেবতা, গন্ধর্ব, নাগ, পশু ও মানুষে। ততোধিক সুন্দর তার কোটরে বসে যাওয়া রক্তচোখ, পচে যাওয়া নাড়িভুঁড়ি, লোহার রডের আদরে বিকল হতে থাকা শরীরযন্ত্র। সারা দেশ জুড়ে এই অনাম্নী অঙ্গনার জন্য প্রতিবাদে সোচ্চার, বিদ্রোহে উত্তাল জনগণ। মোমবাতির নৈঃশব্দে সরব তারকারা। ধর্ষকের শাস্তি চাই। প্রকাশ্য রাস্তায় ফাঁসি চাই। ন্যাংটো করে প্যারেড করাতে চাই, ইঁট ছুড়ে ছুড়ে মারতে চাই, চাই চাই... পিঠ ঠেকে গেছে আমাদের। এমন শাস্তি চাই যেন নিদর্শন হয়ে থাকে। ওই তো শুয়োরের বাচ্চারা... ওরাই তো রেপ করেছিল না? ধরে আন ব্যাটাদের। আইন আইনে থাকুক। আমরা ওদের জবাই করি। ওদের মধ্যে নাকি একটা নেহাত গোঁফ-ওঠা ছোকরা? তাতে কী... পুরুষ পুরুষ। ওদের অত শ্রেণিবিভাগ হয় না। নরম ছিদ্রে গাড়ির পার্টস ঢুকিয়ে মজা মারতে সবাই সমান। ভাবনা, রাগ, দুঃখ আর ঘেন্না মনের মধ্যে এমন কিলবিল করছে যে উগরে না দেওয়া অবধি স্বস্তি নেই। বড় দেরি হয়ে গেল কলম তুলতে। সিঙ্গাপুরের হাসপাতালেই জীবনযুদ্ধ শেষ। থার্টিফার্স্ট নাইট পেরিয়ে নিউ ইয়ার এসে গিয়েছে। কাঁদো দেশ কাঁদো। কেঁদে তোমাদের আবেগের নদীতে প্রতিবাদের প্ল্যাকার্ডগুলো ফেলে দাও। ধর্ষণ আর হেডলাইন নেই। সাইডলাইনে চলে এসেছে। এক কলমে সেরে দেওয়া হয়েছে। ইস্যু বদলে গেছে। নেতায়-নেতায় ইয়ে হচ্ছে, জীবন বয়ে যাচ্ছে। ধর্ষিতারা পুলিসে কমপ্লেন করতে গিয়ে ফের হেনস্থা হচ্ছে। মেডিক্যাল টেস্টে ধর্ষণের কিচ্ছুটি প্রমাণ মিলছে না। গায়ে একটি আঁচড়ও দেখা যাচ্ছে না আতশকাঁচে। 'প্রেক্ষিত' পাল্টে যাচ্ছে, কিছুই ঠাহর করা যাচ্ছে না। এমনই শোকেসে সাজানো ঘটনা হয়ে যাচ্ছে... বাড়ির বাচ্চা প্লাস্টিকের ক্রিকেট ব্যাট নিয়ে ধোনি-ধোনি খেলতে খেলতে মাকে শুধোচ্ছে, মা, মা ধর্ষণ কী করে খায়?

মোহনবাগানের

মোহনবাগানের "অনারকিলিং"

Last Updated: Monday, December 31, 2012, 16:19

মোহনবাগান তাঁবুর সামনে হাউহাউ করে কাঁদছেন সদস্য সমর্থকরা... কেঁদেই যাচ্ছেন। সেই মোহনবাগান নির্বাসিত হওয়ার দিন থেকেই। কাঁদছেন আরও অনেক মানুষ, গোটা দেশ জুড়েই... কাঁদছেন নির্ভয়া-দামিনীর-আমানত হারানোর পর থেকেই। দুটোই তো অনেকটা একইরকম... সযত্নে পালিত ঐতিহ্যকে ধর্ষণ, সুস্থ চিন্তাকে হত্যা। তবে কান্না কেন? কেন চোখে জল? জল তো আগুন নেভায়!

....আর তাই আজ মোহনবাগান নির্বাসিত..

এক ধর্ষকের ডায়রি থেকে

এক ধর্ষকের ডায়রি থেকে

Last Updated: Sunday, December 30, 2012, 17:21

শরীর বিদেহ রতি শরীরই বিধেয় আমাদের নখে দাঁতে কামনাকে দিও দিও তপ্ত যোনি আর স্তন কুচি কুচি মোদ্দা কথা ধর্ষকাম আমাদের রুচি

নারী 'শিক্ষা'

নারী 'শিক্ষা'

Last Updated: Thursday, December 20, 2012, 15:48

আরে বাবা এই সমাজটাকে গড়তে যুগ যুগ ধরে কত ঘাম, রক্ত, বীর্য ঝরিয়েছে বাপ পিতামহেরা। ভুঁইফোড় বাচাল ক'টা মেয়ের জন্য সেইসব মূল্যবোধ রসাতলে যাবে আর হাতে চুড়ি পরে বসে থাকব সে বান্দা পাওনি। স্বাধীনতাটা তোদের দিল কে? তা বলে লাটাইটা ছেড়ে দেব আর তোমরা উদ্বাহু নৃত্য করবে, নিজেদের পুরুষের সমকক্ষ ভাববে, এত আশা করো না। বিদ্যেবুদ্ধির যতই বড়াই করো, মনে রেখো, ওপরওয়ালা আমায় ইনবিল্ট পৌরুষটা দিয়ে পাঠিয়েছে। পেটে ভাত না থাকলে সহ্য করতে পারি। কিন্তু পৌরুষে ঘা! নৈব নৈব চ।

১২১ নট আউট

১২১ নট আউট

Last Updated: Monday, December 17, 2012, 17:31

সেদিনের উলট-পুরাণ সিনেমার মতো মনে আছে। আল্টিমেটলি সেই নায়িকা সেদিন অপেক্ষা করে ভোগ সার্ভ না করেই বাড়ি ফিরেছিলেন, তাঁকে ঘিরে মিডিয়া ছিল না বলে। আজ অবধি নিজের শহরে এত ইউনিটি দেখিনি। এখনও এখানে প্রেস কনফারেন্সে তারকাকে ঘিরে হুড়োহুড়ি আর এক্সক্লুসিভের জন্য এক কোণে পিআরের সঙ্গে পেয়ারের গুজগুজ ফিসফাস করা দেখলে সত্যিই আরও বেশি করে মনে পড়ে ঘটনাটা। বাইট-এর জন্য অবাস্তব খেয়োখেয়ি, প্রায় সারার্থহীন ইন্টারভিউয়ের জন্য এমন উল্লাস... এই আনতাবড়ি সাংবাদিকোচিত উন্মাদনাকে ক্যাচ করেই মিডলম্যানেরা দলে ভারী হয়ে গেল।

সাদ্দামের মা

সাদ্দামের মা

Last Updated: Thursday, December 13, 2012, 17:26

সাদ্দামের মা এখন কোথায় আছেন কে জানে? মাস খানেক আগে শেষবার দেখেছিলাম। হেমন্তের দুপুরে দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে প্রতিদিনের মত বসে একই ভঙ্গিমায় ভিক্ষে চাইছেন। মুখে কোনও সাড়া শব্দ নেই। আওয়াজ নেই। শরীর স্থির। পাথরের মত। তেলচিটে শতচ্ছিন্ন বোরখা। মুখের সামনে জাল ঘেরা একটা পর্দা। তার ভেতর আড়াল করা আছে সাদ্দামের মায়ের চোখ। সেই চোখের দৃষ্টি কোন পথ বা পথিকের দিকে, তা বোঝা যায় না। ফুটপাথে রাখা এনামেলের বাটি। কিছু রেজগি পড়ে। সাদ্দামের মায়ের শীর্ণ, শিরা বের করা, দড়ির মত পাকিয়ে যাওয়া হাত, হাতের তালু আকাশের নীচে পেতে রাখা। সেই করতলে ছুটে চলেছে গঙ্গা, যমুনা, ঝিলম, কৃষ্ণা, কাবেরী, গোদাবরী। দু-পাশের তীরবর্তী রেখায় কত সভ্যতা, কত নগর, কত গাঁও-গেরস্থালি। বণিকের তরণিসম্ভার। ধোবিঘাটের রোদ্দুরে পেতে রাখা অনন্ত ধবল পোশাক।

জন্নত মন্নত হন্যত

জন্নত মন্নত হন্যত

Last Updated: Saturday, November 17, 2012, 17:08

মুম্বইয়ের এন্টারটেনমেন্ট জার্নালিজমে একটা কাহাবত আছে, দমদার সাংবাদিক বলা হবে তখনই, যদি সে শাহরুখ খানের মন্নত-এ এন্ট্রি নিয়ে শাহরুখের ইন্টারভিউ নিয়ে আসেন। ইন শর্ট, মন্নতই সাংবাদিকদের জন্নত। কথাটা যতই নির্লজ্জ হ্যাংলার মতো শোনাক, যা রটে তার কিছু তো বটে। মনে হয় ডালে-ডালে খবরটা কিং খানের কানে গিয়ে পৌছছিল কোনও এক সময়ে। কাজেই এর একখান যোগ্য মুচকি হাসি হেসেছিলেন শাহরুখ। গত কয়েক বছর ধরে ওই দিনটিতে, আশা করি দোসরা নভেম্বরের তাত্পর্য আর বুঝিয়ে বলতে হবে না, মুম্বইদের সকল সাংবাদিকদের ওপেন নেমন্তন্ন থাকে শাহরুখের বাংলোয়। ইয়াবড় নরম-তাজা পেস্ট্রি কাটেন শাহরুখ। ক্রিমের কারুকাজ, হ্যাপি বার্থ়ডে শাহরুখ। কাউকে নিজে হাতে খাইয়ে দেন, কাউকে খুরপি দিয়ে তুলে দেন প্লেটে। বিজ্ঞান থেকে জি কে, যে কোনও প্রশ্নের উত্তর দেন। কেউ ম্নানমুখে ফিরে যান না। ফুড কাউন্টারে থাকে অঢেল ভূরিভোজ এবং ভুঁড়িভোজের ব্যবস্থা..

ভূত বসেছে শিয়রে

ভূত বসেছে শিয়রে

Last Updated: Monday, November 12, 2012, 22:12

গা'টা একটু ছমছম করছে কি? করারই তো কথা। হাজার হোক আজ তো ভূত চতুর্দশী। ভূত তাড়াতে হবে বলেই তো চোদ্দ প্রদীপ জ্বালানো। আলোয় চারিধার ভরিয়ে রাখা। গাঁ ঘরে তো আবার আজ রাতে ঘর থেকে বের হওয়াই মানা। সবার এক কথা, "আজ বেরোস না। তেনারা এসে দেবে গলা টিপে!" এমনিতে এখন দিবসের ছড়াছড়ি। গান্ধী দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস, শিশু দিবসের সঙ্গে হালে যোগ হয়েছে হাসি দিবস, খুশি দিবস, বন্ধু দিবস, প্রেম দিবস আরও আরও কত কী। সেই হিসাবে দেখলে আজ বাঙালির ভূত দিবস। কালিপুজোর ঠিক আগের রাতে এদেশে ভূত চতুর্দশী। কৃষ্ণপক্ষের সেই ঘোর আঁধারে প্রেতের দলকে পিছুটান দেয় ধরণী। ওরা ফিরে আসে নিজের নিজের বাসার আনাচে কানাচে। ভীরু মানুষ আত্মরক্ষার আশায় সাজিয়ে রাখে জ্বলন্ত প্রদীপের পাহারা। বলবৃদ্ধি জন্য ১৪ রকম শাকের আয়োজন করে ভাতের পাতে। শুধু এখানে নয় পশ্চিমের দেশেও ৩১ অক্টোবর তারিখটা চিহ্নিত 'হ্যালোইন' নামে। আত্মাদের গা-ছমছমে রি-ইউনিয়ন ডে।

বৃত্ত

বৃত্ত

Last Updated: Saturday, November 10, 2012, 21:51

বৃত্তটি রচনা করি নিজে। এ সেই বৃত্ত যা আক্ষরিক অর্থেই আমাদের অন্তরমহল। আমি ও আমার পারিপার্শ্বিক। একা এবং কয়েকজন। এই কয়েকজন 'যাকে আমি গ্রহণ করেছি দুহাতের কম্পিত নৌকায়'। এই বৃত্ত আমাদের স্বরচিত। আমার নিজস্ব। যেখানে আমি অকপট, আমি অবিরল। ছোট্ট সে গণ্ডি। মাত্র কয়েকজন সেই বৃত্তের অন্তর্গত। সপ্তদশ শতকের ইংরেজ কবি জন ডান এইরকম এক বৃত্তভাবনার কথা বলে গিয়েছিলেন। আমরা যেভাবে গণিতে বৃত্ত আঁকতে কম্পাস ব্যবহার করি, তিনিও সেইভাবে বৃত্ত রচনা করেছিলেন।