জাগো দলপ্রহরণধারিনী...

জাগো দলপ্রহরণধারিনী...

Last Updated: Wednesday, October 31, 2012, 15:50

গত কয়েকদিন প্রায় পাগল পাগল অবস্থা। রাতে স্বপ্ন দেখলুম জানেন। মানে দুঃস্বপ্ন। গান তাড়া করে বেড়াচ্ছে। আঁকশি নিয়ে এগিয়ে আসছে। অক্টোপাসের আট-দাঁড়া নিয়ে মাথার চুল খামচে ধরছে। কানে গমগম করে বাজছে জেগে ওঠার গান। যেদিকে তাকাই সোনার আলোর মত। যে দিকে ছুটি সেদিকেই জেগে ওঠার গান। জাগো, তুমি জাগো, জাগো দুর্গা, জাগো দশপ্রহরণধারিনী... ভোর রাতে 'জাগো'র গান, খটখটে রোদ্দুরে 'জাগো'র গান, পড়ন্ত বিকেলে 'জাগো'র গান, বেজেই চলেছে মহালয়া। মহালয়া নয়, একেবারে মহাপ্রলয়া। স্বপ্নের মধ্যেই কাছা তুলে দৌড় লাগালাম। পিচকালো রাস্তার এক মোড় পেরিয়ে নতুন মোড়। হাঁফাচ্ছি। দম নেওয়ার চেষ্টা করছি। ব্যাস আবার শুরু হল। জাগো তুমি জাগো, জাগো দশপ্রহরণধারিনী...

একটা মৃত্যু আর কিছু ছবি

একটা মৃত্যু আর কিছু ছবি

Last Updated: Thursday, October 25, 2012, 20:51

কোনও বিখ্যাত মানুষ মারা গেলেই আমরা অনেকেই সেই একই শব্দ ব্যবহার করি। এই যেমন অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল, ওনার মৃত্যুতে একটা বড় শূন্যতা তৈরি হল এই সব আর কি। কিন্তু তাঁর মৃত্যুটাকে শুধু ওভাবে ব্যাখা করা যাবে না। বাকিদের চেয়ে তাঁর লেখা অনেকটা আলাদা ছিল। চিরচারিত ছকের বাইরে তাঁর লেখা তৈরি করেছিল আলাদা ঘরানা। সেই মানুষটার মৃত্যুতে অনেক টুকরো টুকরো ছবিগুলোও আলাদা হয়ে থাকল। সেই ছবিগুলোই প্রমাণ হয়ে থাকল নীললোহিতের শরীরটা আর আমাদের সঙ্গে থাকবে না ঠিকই কিন্তু ওনার চিন্তাভাবনা-লেখা আমাদের জীবনের অনেক কষ্টের মধ্যেও সুখের ঠিকানার খোঁজ দেবে।

মন লাগে না কাজে...

মন লাগে না কাজে...

Last Updated: Thursday, October 25, 2012, 20:22

পুজোর পর পাঠশালায় এক আনমনা ছাত্রের কথা। স্মৃতির বাইনোকুলারে চোখ রাখলে হয়তো পুজোর পর তোমার-আমার ছেলেবেলাটাও এমনই পা দোলানোর। সকালে আলিস্যি। দুপুরটা ফাঁকা। সন্ধেটা মনখারাপের। মা প্যান্ডেল থেকে সি অফ করলে কী হবে? শিউলি সকাল, আর সুনীল আকাশের ছড়ানো মেঘে যে তখনও টাটকা চারদিনের কড়া নেশা। রাস্তা ভরা মাথার সারি, আলোর রোশনাই, হাজার মানুষের কলতান, গ্রাম শহরের ঐক্যবদ্ধ লং মার্চ, সব কি এক নিমেষে হারায়?

যতীনদাসের দুগ্গা

যতীনদাসের দুগ্গা

Last Updated: Thursday, October 18, 2012, 22:36

আমাদের ছেলেবেলার দুর্গা দু'জন; আমাদের কলোনির দুর্গা, আমাদের যতীন দাস নগরের দুর্গা। একজনের নাম ছিল সেন্ট্রালের দুর্গা, অন্যজন পূর্বাশার দুর্গা। সেন্ট্রালের দুর্গাপ্রতিমা দেখলে মনে হত খুব চেনা মুখ। যেন এই মাত্র বলে উঠবেন, আয় দুধ-মুড়ি খেয়ে পড়তে বস। আর পূর্বাশার দুর্গা? রণরঙ্গিনী তার রূপ। আমাদের শৈশবের রণপ্ররোচনা।

"উঠে পড়"

Last Updated: Thursday, October 18, 2012, 21:09

এই দিনেই তো ভোরবেলা ডেকে দিতেন মা। বলতেন, "মহালয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। উঠে পড়। তোর বাবা রেডিও চালিয়ে দিয়েছেন। শোন। উঠে পড়।" ধরমড়িয়ে উঠে পড়তাম। শুনতাম বীরেন্দ্রকিশোর ভদ্রের কণ্ঠে 'মহিষাসুরমর্দিনী' গীতি আলেখ্য। আধো ঘুম চোখে বেড়িয়ে আসতাম বাইরে। আকাশ দেখতাম। মনে হতো আকাশে মহিষাসুর বধ দেখছি।

মালালার ডাইরি

মালালার ডাইরি

Last Updated: Tuesday, October 16, 2012, 18:56

আমি এখনও ঘুমিয়েই রয়েছি। সবাই অনেক চেষ্টা করছেন আমাকে ঘুম থেকে তোলার। কিন্তু আমার ঘুম ভাঙছে না। সবাই ভাবছে আমি খুব কষ্টে আছি। সবাই ইন্টারনেটে, ফেসবুকে আমাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। আমার আরোগ্য কামনা করে মোমবাতি জ্বালাচ্ছে। কিন্তু ওরা কেউ জানে না এক কদিনে কী আনন্দে আছি আমি। কোনও যন্ত্রণাই আমাকে স্পর্শ করছে না আমাকে। কোনও গুলির আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি না আমি। কেউ আমাকে ধর্ষণ অথবা খুনের হুমকিও দিচ্ছে না। আমার চারপাশে আর কোনও আততায়ী নেই। আছে রাষ্ট্র প্রধানেরা। আমার নিজের দেশ থেকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট, সবাই নাকি আমার খবর নিচ্ছেন, আরোগ্য কামনা করছেন। আসলে ওরা কেউ ঘুমতে পারছেন না। যদি পারতেন -তাহলে জানতেন ঘুমে কী অফুরন্ত শান্তি। কয়েকটা বুলেট যে ঘুম উপহার দিয়েছে এই কদিন। এখন আমি বুলেটকেও আর ভয় পাই না। ও আমার বন্ধু।

পোটেনশিয়ালের সদ্ব্যবহার অথবা মধ্যমেধার সাধনা

পোটেনশিয়ালের সদ্ব্যবহার অথবা মধ্যমেধার সাধনা

Last Updated: Saturday, October 13, 2012, 19:11

ডাঃ সিংহ সরকারি হাসপাতালে সরকারি বেতনে সাধারণ মানুষের চিকিত্সা করতেন। প্রাইভেট প্র্যাকটিস করলে যে কোনও দিন তুড়ি মেরে তিনি দশ গুণ রোজগার করতে পারেন। এটাকেই বেসরকারি হাসপাতালের মালিকরা ডাক্তারদের সম্ভাবনা বা 'পোটেনশিয়াল' বলে থাকেন। যে ডাক্তার অকারণে নিছক বিল বাড়ানোর জন্য প্যাথলজি টেস্ট করান না, তাঁকে ডেকে ওই সব হাসপাতালের ম্যানেজাররা বলেন, "ডাক্তারবাবু আপনার কিন্তু পোটেনশিয়াল আছে, আপনি একটু চেষ্টা করলেই আপনার পোটেনশিয়াল রিয়ালাইজ করতে পারেন।" পোটেনশিয়াল মাপা হয় লক্ষ টাকার এককে। রাজ্য সরকার সম্ভবত চাইছে ডাঃ সিংহ তাঁর পোটেনশিয়াল অনুযায়ী রোজগার করুন!!!

হেঁইয়ো মা দুগ্গা!

হেঁইয়ো মা দুগ্গা!

Last Updated: Wednesday, October 10, 2012, 21:35

খুশির শিউলিফুল ভোর। দেরি করে মা আসছেন বলেই মেঘের ছমছমে ভাব উধাও। মহালয়া আসছে। পুজো মানে অনেক কিছু। সঙ্গে বাঙালির বাংলা পরীক্ষা শুরু। বানানে কেমন পাণিনি, সেটা আকাশ-বাতাসে দুলতে থাকা হোর্ডিং দেখলেই হৃদয়ঙ্গম হয়।

প্রপাতের পথে

প্রপাতের পথে

Last Updated: Saturday, October 6, 2012, 22:22

সালওয়া জুড়ুমের উত্‍স সন্ধানে গিয়েছি বিজাপুরের প্রত্যন্ত গ্রাম কারকেলিতে। সময়টা নভেম্বরের মাঝামাঝি। ছত্তিসগড় জুড়ে ভোটের হাওয়া। দু'দিন আগেই সুকমার কাছে ভোটকর্মীদের হেলিকপ্টার গুলি করে নামিয়েছে মাওবাদীরা। গ্রামবাসীদের সতর্কবাণী সত্ত্বেও কাজ মিটিয়ে জগদলপুরের পথ ধরতে না ধরতেই সুয্যিমামা ডুব দিলেন বস্তারের পাহাড় আর জঙ্গলের আড়ালে। প্রায় একশো ষাট-সত্তর কিলোমিটার পথ যেতে হবে। একে বিপদসঙ্কুল, তার উপর কোনও কোনও জায়গায় রাস্তা বলে প্রায় কিছুই নেই। মাওবাদী হানার ছাপ বহন করছে বিধ্বস্ত কালভার্ট।

শেষ নাহি যে

শেষ নাহি যে

Last Updated: Friday, October 5, 2012, 16:10

শেষ! এই শব্দটার মধ্যে একটা মায়া আছে। একটা কান্নাও আছে বোধহয়। শেষ বলে কি কিছু হয়? আবার অন্য ভাবে ভাবলে শেষ তো হয়ই। জন্ম শব্দের মধ্যেই তো তার অস্তিত্বহীনতার কথা বলা আছে! জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে। ইত্যাদি ইত্যাদি। শেষ মানে পূর্ণ ছেদ। এরপর আর কিছু নেই।